আহত শিশুর জীবন বাঁচাতে দৌঁড়লেন আলোকচিত্রী

প্রকাশঃ এপ্রিল ১৮, ২০১৭ সময়ঃ ১:০৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৫৯ অপরাহ্ণ

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছে না নিস্পাপ শিশুরা। তাইতো আমাদের দেখতে হয় রক্তাক্ত শিশুর ব্যথাকাতর মুখ, সমুদ্রের তীরে পড়ে থাকা নিথর শিশুর দেহ। যুদ্ধের ভয়াবহতায় ক্ষুধার্থ শিশুর আর্তনাদ। কোথাও নিরাপদ নয় এই শিশুরা। একটু আশ্রয় পাওয়ার আশায় অপলক নয়নে তাকিয়ে থাকে এরা। তাদের এ দুরবস্থার চিত্র যারা তুলে ধরেন সেই আলোকচিত্রীদের অনেক ঝুঁকির মুখে এ কাজ করতে হয়। তবুও জীবনকে হাতের মুঠোই রেখে আবারও এগিয়ে যান নতুন কোনো ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরতে। তাদেরও আবেগ আছে, কষ্ট আছে। ক্যামেরার পেছনে যা ঢাকা পড়ে থাকে। তেমনই এক আলোকচিত্রীর নাম আবদ আলকাদের হাবাক।

চলতি সপ্তাহেই সিরিয়ার একটি বাসবহরে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন ১২৬ জন। নিহতদের মধ্যে ৬৮ জনই ছিল শিশু। ঘটনাস্থলের কাছেই কাজ করছিলেন হাবাক। বোমা বিস্ফোরণে কিছুক্ষণের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। চেতনা ফিরলেই ছুটে যান ঘটনাস্থলে। হাত লাগান উদ্ধারকাজে।

সে সময়ের ভয়ংকর পরিস্থিতির কথা বললেন হাবাক, ‘ঐ দৃশ্যটি ভয়ংকর ছিল। বিশেষ করে শিশুদের আর্তনাদ। তারা সবার সামনেই মারা যাচ্ছিল। তাই আমরা সহকর্মীদের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিলাম ক্যামেরা রেখে আহতদের উদ্ধার করবো।’ হাবাক জানান, প্রথম যে শিশুটির কাছে তিনি গিয়েছিলেন, সে ততক্ষণে মারা গেছে। এরপর গেলেন আরেক শিশুর দিকে। সে তখনো একটু একটু শ্বাস নিচ্ছে। হাবাক শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে নিরাপদ স্থানের দিকে দৌঁড়াতে শুরু করলেন। সে সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে হাবাক বলেন, ‘শিশুটি আমার হাত ধরে ছিল; ও আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।’

মুহাম্মদ আলরাগেব নামের আরেক আলোকচিত্রী সে সময় হাবাকের চিত্র ক্যামেরায় ধারণ করেছিলেন। সেখানে দেখা যায়, হাবাক কোলে শিশু ও কাঁধে ক্যামেরাটি নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সের দিকে ছুটে যাচ্ছেন। হাবাক জানান, তিনি ছয়-সাত বছরের ঐ শিশুটিকে অ্যাম্বুলেন্সে পৌঁছে দিয়ে আসেন। তবে শিশুটি জীবিত আছে কিনা, জানাতে পারেননি তিনি।

ঐ শিশুকে অ্যাম্বুলেন্সে পৌঁছানোর পর আবার ঘটনাস্থলে ফিরে আসেন হাবাক। সেখানে খুঁজে পান আগুনে পোড়া আরো একটি নিহত শিশুকে। দৃশ্যটি দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি হাবাক। মাটিতে বসে পড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। আরেক আলোকচিত্রীর তোলা ছবিতে ধরা পড়ে হাবাকের কান্নার এই দৃশ্য। তিনি বলেন, ‘আমি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। আমি ও আমার সহকর্মীরা যা দেখেছিলাম, তা বুঝিয়ে বলার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

April 2024
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  
20G